১৮ ডিসেম্বর ২০২১খ্রি. বিকেল ১৫.৩০ ঘটিকায় মহান বিজয় দিবসে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী পুলিশ সদস্যদের অবদান স্মরণে বিএমপি'র অফিসার্স মেস সম্মেলন কক্ষ বরিশালে, বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কর্তৃক আয়োজিত মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী পুলিশ সদস্যদের অবদান স্মরণে, বীর মুক্তিযোদ্ধা পুলিশ সদস্যদের সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
উক্ত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন, পুলিশ কমিশনার বিএমপি জনাব মোঃ শাহাবুদ্দিন খান বিপিএম-বার ।
পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত ও গীতা পাঠে এবং আগত সকল বীর পুলিশ মুক্তিযোদ্ধাদেরকে ফুল দিয়ে বরণ করার মধ্য দিয়ে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের শুভসূচনা হয়।
অতঃপর বীর পুলিশ মুক্তিযোদ্ধাগণ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে সারা দিয়ে যুদ্ধকালীন সময়ের তাদের গৌরব মাখা স্মৃতি সকলের সামনে তুলে ধরেন।
সংবর্ধ্বণা অনুষ্ঠানে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে উপহার সামগ্রী তুলে দিয়ে সভাপতি মহোদয় বক্তব্যে বলেন, আমরা বীর পুলিশ মুক্তিযোদ্ধাদের উত্তরসূরী, এটা আমাদের জন্য অত্যন্ত গর্বের বিষয় এবং আপনাদের সরাসরি দেখে সম্মান জানিয়ে আমরা আরও গর্বিত, উজ্জীবিত ও অনুপ্রাণিত হই।
মুক্তিযুদ্ধে আপনাদের অসামান্য অবদানের জন্য ই আমরা একটি স্বাধীন দেশ পেয়েছি। বাংলাদেশ পুলিশের রয়েছে একটি গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস। মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশ পুলিশই সর্ব প্রথম নিজের জীবন বাজি রেখে সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তুলে দেশটাকে স্বাধীন করেছিল । তাই প্রতিবছর ঘটা করে আপনাদের কাছে পাওয়ার পাশাপাশি আরও বেশি বেশি সামনে পেতে চাই।
তিনি আরও বলেন, যে লক্ষ্য, উদ্দেশ্য ও কারণ নিয়ে সীমাহীন কষ্ট শিকার করে নিশ্চিত মৃত্যু যেনে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন, সেই লক্ষ্য, চেতনা ও পূর্বশর্ত বাস্তবায়নে রাষ্ট্রের কর্মচারী হিসেবে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। আমাদের ভেতরকার নেতিবাচক প্রথা, অপসংস্কৃতি কাটিয়ে পরিবর্তিত এক জনগণের প্রথম ভরসাস্থল পুলিশ হতে অনেকটাই সফল হয়েছি এবং বিভিন্ন উপায়ে জনগণের মুখোমুখি হয়ে দোরগোড়ায় নির্ভেজাল সেবা নিশ্চিত করতে তৎপর হয়ে কাজ করছি।
বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্ব ভিশন, তার গাইডলাইনস, বুদ্ধিমত্তা, পরিশ্রম এবং সবকিছুর মধ্যে সমন্বয় সাধনের দক্ষতায় যে অভূতপূর্ব উন্নতি এসেছে, আজকের এই উন্নয়ন অগ্রগতি আরও আগে হতে পারতো! পঞ্চাশ বছরে না হয়ে কমপক্ষে ২০-২৫ বছরে হতে পারতো! আমরা থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, মালেশিয়া থেকেও এগিয়ে থাকতে পারতাম কিন্তু যাঁরা দূর্ণীতি করে এই দেশটাকে শোষণ করে, গণতন্ত্র হরন করে সামরিক শাসন কায়েম করে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ভুলন্ঠিত করে, বিদেশে টাকা পাচার করে অনিয়ম করেছে, সেই লুটেরা ধনীদের জন্য আমরা ২৫ বছরে যা করতে পারতাম সেখানে পঞ্চাশ বছর লেগেছে।
তিনি আরও বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ধারক ও বাহক হিসেবে, একটি স্বাধীন, সার্বভৌম ও অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার ব্রত নিয়ে বর্তমান আইজিপি মহোদয় এর নেতৃত্বে আমরা বহুদূরে এগিয়ে আছি, আমাদের যেন এই অগ্রগতি থেকে পিছিয়ে যেতে না হয় সেজন্য একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে পুলিশ বাহিনীর কোন অনিয়ম অন্যায়, অপেশাদারসুলভ আচরণ দেখলে চোখে আঙুল দিয়ে শৃঙ্খলার চাহিদা পূরণে সেই ভুল ধরিয়ে দিয়ে বিভিন্ন পরামর্শ নিয়ে আমাদের পাশে থাকবেন। তাহলেই আমরা আপনাদের এই নিঃস্বার্থ আত্মত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীন বাংলাদেশকে আরও উন্নত শৃঙ্খলা বিনির্মাণের মাধ্যমে আরও সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবো।
অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম এন্ড অপস) জনাব রাসেল এর সঞ্চালনায় এসময় উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার সদরদপ্তর বিএমপি জনাব প্রলয় চিসিম সহ বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের সকল ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ।